ব্রিটেনের ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন আজ

যুক্তরাজ্যের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন আজ। ১২ ডিসেম্বরের এ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।  

বলা হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন এমন নির্বাচনের মুখোমুখি আর হয়নি। এর কারণ বৃহস্পতিবারের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলের ওপর দেশটির ভবিষ্যতের অনেক কিছু নির্ভর করছে।

এদিকে যুক্তরাজ্যে পাঁচ বছরের কম সময়ের মধ্যে তৃতীয় সাধারণ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে। এর আগে ২০১৫ ও ২০১৭ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও দুইবারই নির্বাচিত পার্লামেন্ট পূর্ণ মেয়াদ পার করতে পারেনি।

ব্রেক্সিট অর্থাৎ ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগের প্রশ্নে প্রায় তিন বছর ধরে পার্লামেন্টে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে গত দু'বছরের মধ্যে এটি দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচন।

স্থানীয় সময় আজ সকাল ৭টায় ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৬৫০টি সংসদীয় আসনের ভোট কেন্দ্রগুলোতে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। রাত ১০টায় ভোট শেষ হবে, সঙ্গে সঙ্গেই ভোট গণনা শুরু হবে। শুক্রবার সকালে প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অধিকাংশ ফলাফল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। 

প্রায় ১০০ বছরের মধ্যে এই প্রথম ডিসেম্বরে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কনসারভেটিভ পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকারে ফিরবে বলে আশা করছে, অন্যদিকে জেরেমি করবিনের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি ব্রেক্সিটের পরিবর্তে তাদের নানা ধরণের রাষ্ট্রীয় কল্যাণমূলক কর্মসূচিকেই তাদের প্রচারে প্রাধান্য দিচ্ছে।

ব্রিটেনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার ২০১৬ সালের গণভোটে ইইউ ত্যাগের পক্ষে রায় দেয়। তার আগের কয়েক দশক ধরে ব্রিটেন ও ইইউর অর্থনীতি ও বাণিজ্য অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত ছিল। তাই গণভোটের পরই কথা ওঠে যে ইইউ ত্যাগ করার ফলে যাতে অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কোনো ক্ষতি না হয়, দু-অংশের জনগণ চাকরিবাকরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব সুবিধা ভোগ করতেন সেগুলোতে কোনো ছেদ যেন না পড়ে- তাই ব্রেক্সিট কীভাবে হবে তা আগে থেকেই একটা চুক্তির ভিত্তিতে স্থির করে নিতে হবে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও তার আগে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে এরকম চুক্তি করে এসেছিলেন ইইউয়ের সঙ্গে। কিন্তু তা তারা পার্লামেন্টে পাস করাতে পারেননি। কারণ কনসারভেটিভ পার্টির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না, তাদের কোয়ালিশন অংশীদার ওই চুক্তিকে সমর্থন করেনি এবং চুক্তিটি যে লেবার পার্টিসহ অন্য বিরোধীদলগুলোর সমর্থন পাব, তাও হয়নি।

ফলে তেরেসা মে তিনবার ও বরিস জনসন একবার পার্লামেন্টে তুলেও তাদের ব্রেক্সিট চুক্তি পাস করাতে পারেননি। পার্লামেন্টে সৃষ্টি হয় ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে নজিরবিহীন তিক্ততা ও বিভক্তি ও অচলাবস্থা। ব্রেক্সিট হবে কি হবে না- এই অনিশ্চয়তায় ব্যবসা-বাণিজ্যে তৈরি হয়েছে স্থবিরতা ।

অনেকে বলছেন, ব্রিটেনে রাজনীতিবিদদের ওপর জনগণের আস্থাই কমে যাচ্ছে। কনসারভেটিভ ও লেবার দুইদলই ব্রেক্সিট চাইছে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে। এ অবস্থার সমাধানের জন্যই নতুন এই নির্বাচন দেয়া হয়েছে- যাতে কোনো একটি দল সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এসে ব্যাপারটাকে সামনে এগিয়ে নিতে পারে। -বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //